চার দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। প্রায় সাত বছরের মাথায় তার দ্বিতীয় দফা সফরে মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং মানবাধিকারের প্রসঙ্গ অগ্রাধিকার পাবে।গুতেরেস এখানে পৌঁছানোর পর, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
আগামীকাল শুক্রবার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকারবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে দেখা করবেন। পরে, জাতিসংঘ মহাসচিব সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে দেখা করবেন। বৈঠকের পর, গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন।
গুতেরেস কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাকে স্বাগত জানাবেন।প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। এ সময় দুই নেতা রোহিঙ্গা ইমাম ও সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ইফতারের আগে, মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও কথা বলবেন। গুতেরেস সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন।
পরদিন শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের ভবন পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সঙ্গে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পরে, গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের সঙ্গে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
আগামী রবিবার গুতেরেস সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন। এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে- তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।